। ০৮ই মার্চ ২০২০।
ওলাশুনি। এই দেবতার নাম অনেকেই শোনেননি। আমরাও জানতাম না। পারাদ্বীপ থেকে ৫৭ কিমি দূরে ওলাশুনি পাহাড়ে বিরাজমান এই দেবী। সকাল ১১.৩০টায় বেড়িয়ে পড়লাম আমরা। শেষ ১২ কিমি রাস্তা খুব মনরম। দুইপাশে ছোট পাহাড় আর সবুজের ঘনঘটা। বেশ কিছুটা পাহাড়ের আঁকা-বাঁকা পথ পেরিয়ে আমরা হাজির হলাম আমাদের গন্তব্যে। সময় লাগল ১.৩০ ঘণ্টা। Parking space এর কোন অভাব নেই। Parking fee ২০ টাকা, ঘণ্টা হিসেবে নয়। এখানে জানিয়ে রাখি যে রাস্তায় কোথাও খাবার জায়গা নেই, তাই সেই রকম প্রস্তুতি নিয়ে বেরনই ভাল। পৌঁছতেই আমরা এক বিশাল ভীড়ের সম্মুখিন হলাম। বোঝা গেল, যে এই দেবতা খুব জাগ্রত এবং ভক্তদের ভালই সমাগম হয়। আমরা এগিয়ে প্রবেশ করলাম মন্দিরের মধ্যে। এই মন্দির বিখ্যাত হয় জনৈক odiya লেখক, দার্শনিক এবং যোগী আরক্ষিত দাস এর কারণে। আরক্ষিত দাস জন্মেছিলেন গঙ্গা রাজবংশে অষ্টাদশ শতাব্দিতে। তিনি সমগ্র Kalinga (Odisha) ভ্রমন শুরু করেন উপযুক্ত ধ্যান করার স্থানের সন্ধানে। অবশেষে এসে উপস্থিত হন ওলাশুনি পাহাড়ে, যা সেই সময়ে কেন্দ্রাপাড়ার রাজা রাধাশ্যাম নরেন্দ্রর অধিনে ছিল। আরক্ষিত দাস এর অনুরধে রাজামশাই রাজি হন তাঁকে ওই পাহাড়ে থাকতে দেন। আরক্ষিত দাস শুরু করেন ওলাশুনি মাতার আরাধনা এবং ধ্যান সাধনা। ১৮৩৭ সালের ১৯শে জানুয়ারী আরক্ষিত দাস আত্ম-সামাধি নেন ওই স্থানেই।
বাইরে জুতো খুলে মন্দিরে প্রবেশ করতে হয়। মন্দিরের ভিতরে প্রসাদ এর দোকান রয়েছে। কেউ চাইলে প্রসাদ, মুলত মিষ্টি, কিনে পুজো দিতে পারেন। ওলাশুনি দেবি ছাড়াও জগন্নাথ দেব এবং মহাদেব এর মুর্তি রয়েছে। পরিছন্নতার ওপর বিশেষ নজর আছে মন্দির কর্তৃপক্ষের। সব দেবতা আর দেবীর আশীর্বাদ নিয়ে আমরা বেরয়ে পরলাম ফিরে আসার জন্যে।
নীচে কিছু ছবি শেয়ার করলাম। এর সাথে আমাদের channel এর ভিডিও link ও শেয়ার করা রইল। আশা করি আপনাদের ভাল লাগবে। পুরীতে বেড়াতে এসে অবশ্যই ঘুরে জেতে পারেন ওলাশুনি পাহাড়ের মাথায় অবস্থিত এই মন্দির।
গুরুত্বপূর্ণ তথ্যঃ
ভুবনেস্বর থেকে দূরত্বঃ ৮৭ কিমি , ২ ঘণ্টা । কটক থেকে দূরত্বঃ ৬৫ কিমি, ১ ঘণ্টা ৩০ মিনিট ।
বাসের সুব্যাবস্থা না থাকায় রেলওয়ে স্টেশন থেকে গাড়ি ভাড়া করে আসাই ভাল।